যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্ত ছাড়া চলে দাঁতের চিকিৎসা

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটের বেশির ভাগ যন্ত্রপাতি পুরোনো। গত বুধবার দুপুরে ছবি: জুয়েল শীল

দাঁতের ব্যথা নিয়ে এক মাস আগে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছিলেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। বহির্বিভাগ থেকে তাঁকে পাঠানো হয় ডেন্টাল ইউনিটে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রুট ক্যানেলের জন্য সময় দেওয়া হয় এক মাস পর। কিন্তু নির্ধারিত দিনে গিয়েও চিকিৎসা পাননি তিনি।

গত বুধবার ডেন্টাল ইউনিটের সামনে কথা হয় সাইফুদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা পূর্ণাঙ্গ ডেন্টাল কলেজের দাবিতে আন্দোলন করছেন। আমাকে পরে আসতে বলা হয়েছে।’ পরে গতকাল রোববার যোগাযোগ করা হলে সাইফুদ্দিন জানান, তিনি এখনো চিকিৎসা নিতে পারেননি।

মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের মতো শতাধিক রোগী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দাঁতের চিকিৎসার জন্য এক থেকে দুই মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও চিকিৎসক না থাকায় দ্রুত সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের নেই পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, উন্নত সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণের সুযোগও। এসব সমস্যার সমাধান ও পূর্ণাঙ্গ ডেন্টাল কলেজের দাবিতে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন।

১৯৮৯ সালে ৬০ আসন নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ডেন্টাল ইউনিট চালু হয়। বর্তমানে ৩৫০ আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছেন। প্রতিদিন এখানে চার শতাধিক রোগী দাঁতের চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু পর্যাপ্ত সরঞ্জাম না থাকায় তাঁদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কনজারভেটিভ ডেন্টিস্ট্রি ওয়ার্ডের তিন কক্ষে দাঁতের ফিলিং ও রুট ক্যানেলের চিকিৎসা দেওয়া হয়। এসব কক্ষে অপরিচ্ছন্ন যন্ত্রপাতি, ভাঙা ডেন্টাল চেয়ার ও পুরোনো সরঞ্জাম ব্যবহার করা হচ্ছে। ১৩টি চেয়ারের মধ্যে ৮টি নষ্ট; বাকিগুলোর অবস্থাও ভালো নয়। কোনো চেয়ারের হেলান ভেঙে গেছে, আবার কোনোটি টুল দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে।

ইন্টার্ন চিকিৎসক ও কর্মচারীরা জানান, এসব চেয়ার কবে কেনা হয়েছিল, তা কেউ সঠিকভাবে বলতে পারেন না। সব ওয়ার্ড মিলিয়ে অর্ধেকের বেশি চেয়ার অচল। জীবাণুমুক্ত করার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় একই যন্ত্রপাতি একাধিক রোগীর ওপর ব্যবহার করতে হয়।

ডেন্টাল ইউনিটের প্রধান মনোজ কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘ইউনিটের সরঞ্জাম অনেক পুরোনো। ডেন্টাল চেয়ারসহ বেশ কিছু যন্ত্র নষ্ট। সব সমস্যা মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ ডেন্টাল কলেজের দাবিতে শিক্ষার্থীরা যে কথা বলেছেন, তা-ও আমরা জানিয়েছি।’

১৯৮৯ সালে ৬০ আসন নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ডেন্টাল ইউনিট চালু হয়। বর্তমানে ৩৫০ আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছেন। প্রতিদিন এখানে চার শতাধিক রোগী দাঁতের চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু পর্যাপ্ত সরঞ্জাম না থাকায় তাঁদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

Scroll to Top