কালো উইকেটে নিজেদের কাটা কুয়ায় পড়লো বাংলাদেশ

কালো উইকেটে নিজেদের ফাঁদে বাংলাদেশ। আবিদ হাসান

‘কালো উইকেট’-বাংলাদেশ ক্রিকেটে গত কয়েক দিনে সবচেয়ে আলোচিত কথা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্যই এমন উইকেটে স্পিনের ফাঁদ পেতেছিল বাংলাদেশ দল। কিন্তু দ্বিতীয় ওয়ানডের পর উল্টো প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, বাংলাদেশ নিজেদের পাতা ফাঁদেই পড়ল না তো!

গতকাল দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা সৌম্য সরকার অবশ্য এমন কিছু নাকচ করে দিয়েছেন। কিন্তু মাঠের ক্রিকেটে তাঁর কথার প্রতিফলন ছিল না একদমই। উইকেটের ‘ভাষা’ পড়ে যে কৌশলটা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সাজিয়েছে, সুপার ওভারে ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতা ফিরিয়ে তাতে তাঁরা সফলও হয়েছে।

প্রথম ওয়ানডেতে হেরে দুশ্চিন্তায় পড়ে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ তড়িঘড়ি করে উড়িয়ে এনেছিল আকিল হোসেনকে। গত পরশু রাতে ঢাকায় নেমে ভোরে হোটেলে পৌঁছান এই বাঁহাতি স্পিনার। গতকাল দুপুরে ম্যাচ খেলে সুপার ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জেতান আকিল। ৬ বলে ১১ রান করতে নামা বাংলাদেশকে ৯ রানেই আটকে দেন।

বাংলাদেশকে যে তাদের পাতা স্পিন ফাঁদে ফেলতে চায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ, সেটি টের পাওয়া গিয়েছিল দলটির একাদশ দেখেই। আগের ম্যাচের দুই বিশেষজ্ঞ পেসারকে তাঁরা বসিয়ে রেখেছিল। অনিয়মিত যাঁরা ছিলেন, তাঁদেরও বল না দিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসেই প্রথমবার পুরো ৫০ ওভারই স্পিনারদের দিয়ে বোলিং করায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

তাতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা সুবিধা করতে পারেননি একদমই। সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়েছে অ্যালিক অ্যাথানেজের বিপক্ষে। অথচ তিনি কি না আগের ১৫ ওয়ানডেতে মাত্র দুবার বোলিং করেছেন, সেটাও মাত্র ৪ ওভার। কাল তিনি শুধু ১০ ওভারের কোটাই শেষ করেননি, ২ উইকেট নিয়ে দেন মাত্র ১৪ রান।

অবস্থা এমন হয়ে গিয়েছিল যে বাংলাদেশ ২০০ করবে, সেই সম্ভাবনাও প্রায় নেই হতে চলেছিল। পরে রিশাদ হোসেন ১৪ বলে ৩৯ রান করে ২০০ পার করা সংগ্রহ এনে দেন বাংলাদেশকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজও কি বাংলাদেশকে স্পিন ফাঁদে ফেলতে চেয়েছিল?

দলটির প্রতিনিধি হয়ে আসা আকিল জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আপনি উইকেটে তাকালেই বুঝবেন, এখানে পেসারদের এফোর্ট দিয়ে বল করেও কোনো ফল পাওয়া যাবে না। আমাদের যথেষ্ট মানসম্পন্ন পেসার আছে। অ্যালিক পার্টটাইমার হিসেবে এসেছিল, কিন্তু সে নিয়ম মেনে বল করেছে যেটাই মূল বিষয়, সেটা সে আজ আমাদের দেখে করেছে। এ ধরনের উইকেটে আপনার সেরা একাদশ বাছাই করা গুরুত্বপূর্ণ। আজ (কাল) যেমন দেখেছেন, আমরা ডানহাতি-বাঁহাতি কম্বিনেশনে স্থির থেকেছি। পুরো বিষয়টা হচ্ছে ম্যাচ জেতার জন্য কী করা দরকার।’

সেই কাজটা ওয়েস্ট ইন্ডিজ বল হাতে ভালোভাবে করতে পারলেও বাংলাদেশ পারেনি। ১৭৭ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৮ উইকেট তুলে নিতে পেরেছিল তারা। কিন্তু এরপরই শাই হোপ ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দাঁড়িয়ে যান একদিকে।

৬৭ বলে ৫৩ রানের ইনিংসে ম্যাচটা টাই করেই মাঠ ছাড়েন হোপ। এলোমেলো হয়ে যায় বাংলাদেশের পরিকল্পনাও। মোস্তাফিজুর রহমানের কোটার দুই ওভার বোলিংও বাকি থাকে।

Scroll to Top