সালথা উপজেলা চেয়ারম্যান দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের আইনি পদক্ষেপ

ওয়াদুদ মাতুবব্বর ও তার স্ত্রী রুমা আক্তার। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ওয়াদুদ মাতুবব্বর এবং তার স্ত্রী রুমা আক্তারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। গতকাল রোববার দুপুরে ফরিদপুরের বিশেষ জজ আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ফরিদপুরের উপ-পরিচালক রতন কুমার দাস বাদী হয়ে আলাদা দুটি মামলা দায়ের করেন।

ওয়াদুদ মাতুব্বর (৪৮) ফরিদপুরের সালথা উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ওই উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের কাকিয়ার গট্টি গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। ২০১৮ সালে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০২৩ সালে তিনি দ্বিতীয় বারের মতো উপজেলা চেয়ারম্যান। ২০২৪ সালে সারাদেশে জনপ্রতিনিধি অপসারণে সময় তিনি অপসারিত হন।

এছাড়া তার স্ত্রী রুমা আক্তার (৪০) সালথা উপজেলার সিংহপ্রতাপ গ্রামের এমামুল হোসেনের তারার মেয়ে। স্বামী ওয়াদুদ উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে স্ত্রীর নামে ঠিকাদারি লাইসেন্স করে তার নামে অর্থ সম্পদ করেন বলে এলাকায় চাউর রয়েছে।  

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ওয়াদুদ মাতুব্বরের ও স্ত্রী রুমা আক্তারের দাখিলকৃত আয়কর রির্টানে মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাদের দখলে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ ও ভোগ দখলে রাখার অভিযোগে ২০০৪ সালের ২৬ (২) এবং ২৭ (১) ধারা মোতাবেক মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ওয়াদুদ ২৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৮৪ টাকার আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন। কিন্তু অনুসন্ধানে তার ৮৬ লাখ ৪৯ হাজার ৬৩১ টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে। এখানে তিনি ৫৫ লাখ ২৯ হাজার ৪৬৪ টাকার সম্পদ আয়বহির্ভূত সম্পদের হিসাব গোপন করেন।

তার স্ত্রী রুমা আক্তার তার আয়কর বিবরণীতে ৬৭ লাখ ১২ হাজার ৮৫৬ টাকা দাখিল করেন। প্রাথমিক অনুসন্ধানে তার ১ কোটি ৪১ লাখ ৫৪ হাজার ৭৫৪ টাকা সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। এখানে তার বিরুদ্ধে ৭৪ লাখ ৪১ হাজার ৮৯৮ মূল্যের সম্পদ অবৈধ অর্জন ও ভোগ দখলে রাখার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

মামলার নথিতে ওয়াদুদ মাতুব্বরের সময় ২০ মার্চ ২০০২ সাল থেকে ৮ অক্টোবর ২০২৩ সাল পর্যন্ত দেখানো হয়েছে। এছাড়া তার স্ত্রী রুমা আক্তার ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫ সাল থেকে ৮ অক্টোবর ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এই সম্পদ অর্জন করেছেন।

দুদক ফরিদপুরের সহকারী পরিদর্শক মো. শামীম জানান, প্রাথমিক তদন্তে ওয়াদুদ মাতুব্বর ও তার স্ত্রী রুমা আক্তারের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে তথ্য-প্রমাণ পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। পরবর্তী তাদের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে চার্জশিট দাখিল করা হবে।

Scroll to Top