দীপাবলি হোক দুর্নীতি-লোভ-বিভেদের বিরুদ্ধে আলোর উৎসব: প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার


মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, দীপাবলির আলো হোক দুর্নীতি, লোভ ও বিভেদের বিরুদ্ধে একত্রিত অবস্থানের প্রতীক। তার মতে, এ উৎসবের প্রকৃত তাৎপর্য নিহিত রয়েছে সত্য, ন্যায় ও সুশাসনের আলোয় সমাজকে আলোকিত করার মধ্যে।

তিনি বলেন, প্রতি বছর আমরা আলোর উৎসব উদযাপন করি, কিন্তু কেউ কেউ এখনো অন্ধকারে রয়ে গেছে। আলো মানে সত্য, ন্যায় ও সৎপথ। অন্ধকারকে প্রত্যাখ্যান করা মানেই দুর্নীতিকে প্রত্যাখ্যান করা—এই হচ্ছে দীপাবলির আসল অর্থ।

শনিবার কেএল সেন্ট্রালে অনুষ্ঠিত ‘মাদানি দীপাবলি ওপেন হাউস’-এ (বিষয়: Cahaya Madani, Sinar Perpaduan) বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জাতিগত ও ধর্মীয় বিভাজনের সুযোগ নিয়ে রাজনৈতিক লাভবান হতে চাওয়া ব্যক্তিদের হাত থেকে দেশের বহু জাতিগোষ্ঠীর সম্প্রীতি রক্ষা করা জরুরি।

তিনি বলেন, আমরা প্রায়ই আমাদের সামাজিক সম্প্রীতিকে স্বাভাবিক ভেবে নিই, কিন্তু বাইরের লোকেরা দেখে—এটা আসলে কত অসাধারণ একটি অর্জন। আমাদের বাবা-মা যুগে হরি রায়া, দীপাবলি, চাইনিজ নিউ ইয়ার কিংবা বড়দিন—সবই ছিল আমাদের যৌথ সংস্কৃতির অংশ। এসব উদযাপনে আমরা কিছু হারাই না, বরং ঐক্য অর্জন করি।

আনোয়ার ইব্রাহিম সতর্ক করে বলেন, বিভেদমূলক রাজনীতি এখন জাতীয় স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে এবং তা সংসদ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, গ্রাম থেকে শহর—সব জায়গায়ই বিভেদমূলক ইস্যু তোলা হচ্ছে। যদি পেনাংয়ে একটু বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়, কারণ সেখানে অ-মালয় সংখ্যাগরিষ্ঠ, সঙ্গে সঙ্গে সমালোচনা শুরু হয়। কিন্তু যখন কেলান্তান বা তেরেঙ্গানু একই রকম তহবিল পায়, তখন কেউ কিছু বলে না।

তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র অর্থহীন হয়ে পড়ে যদি ভোটাররা জাতিগত ও ধর্মীয় আবেগে বিভ্রান্ত হয়। “জাতিগত আবেগের টান প্রায়ই যুক্তির চেয়ে শক্তিশালী হয়।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী জানান, সংস্কারের জন্য ধৈর্য ও সততা অপরিহার্য—এভাবেই জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। দশকের পর দশক ধরে অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতি হয়েছে। কিন্তু মাত্র দুই বছরেরও কিছু বেশি সময়ে আমরা প্রমাণ করেছি, ১৫.৫ বিলিয়ন রিঙ্গিত অপব্যবহৃত অর্থ উদ্ধার করা সম্ভব। এই অর্থ জনগণের জন্য, লন্ডন বা অস্ট্রেলিয়ায় বাড়িওয়ালা রাজনীতিবিদদের জন্য নয়।

বিরোধী দলকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, যারা অতীতে অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে, তারাই এখন সততার রক্ষক সেজে সংস্কারের বুলি আওড়াচ্ছে—এটা সত্যিই হাস্যকর।

আনোয়ার বলেন, মেধাবী ভারতীয় শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানে সরকার নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। গত দুই দশক ধরে এই উদ্বেগ রয়ে গেছে—প্রতিভাবান ভারতীয় শিক্ষার্থীরা ভর্তি সুযোগ পাচ্ছে না। আমরা এবার সেই সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নিয়েছি।

সরকার ১,৫০০ নতুন ম্যাট্রিকুলেশন ও এসটিপিএম (STPM) আসন অনুমোদন করেছে, যা বিদ্যমান মালয় কোটাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে না।

Scroll to Top