[caption id="attachment_10257" align="aligncenter" width="600"]
গ্রাহকদের ৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জনতা ব্যাংকের ম্যানেজার জেলহাজতে। ছবি: সংগৃহীত [/caption]
পাবনার সাঁথিয়ার বনগ্রাম জনতা ব্যাংকের গ্রাহকদের ৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ম্যানেজার হেমায়েত করিমকে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। ব্যাংক ম্যানেজারের আটকের খবরে রোববার (১৯ অক্টোবর) ব্যাংকে গ্রাহকদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।
জানা যায়, গত বুধবার (১৫ অক্টোবর) বনগ্রামের ব্যবসায়ী উপজেলার সাগরদারী গ্রামের সালাম ব্যাপারী জনতা ব্যাংক বনগ্রাম বাজার শাখায় টাকা তুলতে যান। তার হিসাবে টাকা নেই বলে ব্যাংকের হিসাব রক্ষক জানান। এ ঘটনায় সালামের ডাক চিৎকারে আশপাশের ব্যবসায়ী গ্রাহকরা ব্যাংকে জড়ো হয়ে তাদের হিসাব নম্বর চেক করেন। পরে দেখা যায় প্রায় গ্রাহকেরই জমা রাখা টাকা কম। বিষয়টি জেলা অফিসকে জানালে তারা এসে ঘটনার সত্যতা পায়। এ নিয়ে রাত ভর যাচাই বাছাই করে অভিযুক্ত হেমায়েত করিমকে পুলিশ হেফাজতে দেওয়া হয়।
গত ১৬ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার ) নতুন ব্যবস্থাপক ফরিদুজ্জামানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওই দিনই ফরিদুজ্জামান বাদী হয়ে আতাইকুলা থানায় আগের ম্যানেজারের বিরুদ্ধে ৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মোহাম্মদ আলমগীর হোসের জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে ১৫৪ ধারায় মামলা রুজু করেবৃহস্পতিবার অভিযুক্তকে পাবনা আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে বনগ্রাম বাজার জনতা ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক আটকের ঘটনার সংবাদ জানাজানি হলে গ্রাহকদের রোববার সকাল থেকে ব্যাংকে ভিড় দেখা গেছে। সবাই তাদের নিজের হিসাবে রাখা টাকা চেক করছেন।
বনগ্রামের ব্যবসায়ী তনয় ভ্যারাইটিস দোকানের মালিক তনয় সাহা জানান, তার সিসি লোনের ৪৯ লাখ টাকা হিসাব থেকে উধাও হয়েছে। তিনি আরও জানান, হিসাব থেকে টাকা তুলে নেওয়ার আগে মোবাইলের ম্যাসেজ অবশন বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সাগরদারি গ্রামের সালাম ব্যাপারী জানান, ‘আমি গরুর ব্যবসা করি। ব্যবসার সব টাকা জনতা ব্যাংক বনগ্রাম শাখায় রেখেছিলাম। গত বুধবার দুপুরে ব্যাংকে টাকা তুলতে গেলে দেখি আমার হিসাব থেকে ৪১ লাখ টাকা নেই।’
এ ছাড়া খালইভড়া গ্রামের শাপলা খাতুনের ১৬ লাখ টাকার জমা রশিদ দিলেও ওই টাকা হিসাব নম্বরে জমা হয়নি। ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুনসুর আলম পিন্চুর হিসাব থেকে ১০ লাখ টাকা উধাও হয়ে গেছে। বনগ্রামের আ. মতিনের ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, রাজাপুর গ্রামের হযরত আলীর ১ লাখ ৫০ হাজার, বহল বাড়ীয়ার আবু জাফরের ৫ লাখ টাকাসহ বিভিন্ন গ্রাহকের টাকা আত্মসাত হয়েছে বলে জানান তারা।
বনগ্রাম জনতা ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক ফরিদুজ্জামান বলেন, ‘গ্রাহকদের থেকে অভিযোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জনতা ব্যাংক পাবনা শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মুন্জুরুল ইসলাম জানান, বিভাগীয় কর্মকর্তারা ও ঢাকা হেড অফিসের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে তদন্ত করছেন। তদন্ত শেষে আসল ঘটনা জানা যাবে। অভিযুক্ত ম্যানেজার বর্তমানে জেলহাজতে আছেন।
![]()