সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে ব্যাটারদের সাহস জোগাচ্ছেন বোলাররা

ছবি- বিসিবি

নো ট্রেনিং, নো মিডিয়া অ্যাক্টিভিটি– বিসিবির মিডিয়া গ্রুপে টেক্সট পাঠিয়ে গতকাল সারাবেলা হোটেলেই কাটিয়ে দিয়েছেন লিটন দাসরা। অনেকটা ‘নো ডিস্টার্ব’ টানিয়ে হোটেল রুমের দরজা বন্ধ করে চারপাশের সবকিছু থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার মতোই ব্যাপার। কিন্তু তা কি পারছেন অধিনায়ক? আগের দিন ম্যাচটি হারার পর পুরস্কার মঞ্চে শামীমকে নিয়ে বলা তাঁর হতাশার কথা নিয়ে ফেসবুক দুই ভাগে বিভক্ত। এক দল মনে করছেন, ঠিক ঠিক ঠিক…। আরেক দলের যুক্তি– সবার সামনে এভাবে কারও নাম ধরে অভিযোগ না তুললেও পারতেন অধিনায়ক।

আসলে সিরিজের আগে লিটন মাঠে যে চাপ চেয়ে নিতে চেয়েছিলেন বোলারদের জন্য, সেটাই উল্টো ঘুরে এখন ব্যাটারদের কাঁধে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ছয় ব্যাটার মিলে তুলেছেন ৬২ রান, সেখানে পাঁচ বোলার নিয়েছেন ৮৭ রান! চট্টগ্রামে সিরিজ বাঁচানোর আজকের ম্যাচে তাই বোলাররাই যেন সাহস জোগাচ্ছেন ব্যাটারদের। ‘আমরা দেশের বাইরে এত সিরিজ জিতলাম আর এখানে পারব না? এই মাঠ তো আমাদের চেনা। বিপিএলে ১৮০-২০০ রানও হয় এখানে।’ দম ছিল তানজিম সাকিবের কথাগুলোর মধ্যে।

কিন্তু কথাগুলো কতটা নাড়া দেবে ব্যাটারদের, তা এখনই বোঝা সম্ভব নয়। কেননা শুধু এই ম্যাচেই নয়, বাংলাদেশ এশিয়া কাপের দুটি বড় ম্যাচ হেরেছে রান তাড়া করতে নেমে। দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে ১৬৭ রান তাড়া করতে নেমে গুটিয়ে গেছে ১২৭-এ, আর পাকিস্তানের সঙ্গে ১৩৫ রান তাড়া করতে নেমে ১২৪-এ আত্মহনন! সর্বশেষ উইন্ডিজের কাছে ১৬৫ তাড়া করতে নেমে সাকল্যে ১৪৯। ম্যাচগুলোর প্রতিটিতেই চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছেন ব্যাটাররা। সেই জায়গায় আজ একাদশে একটি পরিবর্তন অন্তত নিশ্চিত। খেলবেন জাকের আলী, তবে কার বদলে তিনি খেলবেন, সেটা নিয়ে কানাঘুষা আছে। শেষ পাঁচ ম্যাচের তিনটিতে শূন্য হাঁকানো শামীম নাকি নুরুল হাসান সোহান? শামীমকে দায়িত্ব নেওয়ার কথা বললেও তাঁকে আজকে আরেকটা সুযোগ দিতেই পারেন লিটন। টানা চার সিরিজ জয়ের পর ঘরের মাঠে এই সিরিজ হাতছাড়া করার কথা কল্পনাতেও আনছেন না দলের কেউ।

ওপেনিংয়ে তানজিদ আর সাইফকে শটস খেলার ফ্রি লাইসেন্স দেওয়াই থাকে, তাই তাদের নিয়ে ঝুঁকিও আছে। সে ক্ষেত্রে লিটন পরিস্থিতি বুঝে হাত খোলার সিদ্ধান্ত নেন। তবে মিডল অর্ডারে তাওহীদ হৃদয়, শামীম হোসেন আর নুরুল হাসান সোহানের কোনো একজনের কাছ থেকে অ্যাঙ্করিং রোল আশা করছে টিম ম্যানেজমেন্ট। এরই মধ্যে স্কয়ার লেগে বাংলাদেশি ব্যাটারদের ক্যাচ দেওয়ার দুর্বলতা ধরে ফেলেছেন ক্যারিবিয়ান কোচ ড্যারেন স্যামি। প্রথম ম্যাচের সব ওভারে ওই জায়গায় প্রহরীর মতো ফিল্ডার দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন তিনি।

ডেথ ওভারে বাংলাদেশি বোলারদের দুর্বলতাও ধরা পড়ে যাচ্ছে রোভম্যান পাওয়েলদের কাছে। ব্যাট হাতে তানজিম তামিম যতই চার-ছক্কা হাঁকান না কেন, ডেথ ওভারে ফুলটসের মতো ভুলগুলো হয়ে যাচ্ছে তাঁর। তাসকিন উইকেট পাওয়ার আশায় স্টাম্প বরাবার বল রেখে মার খাচ্ছেন। শুধু মুস্তাফিজের ওয়াইড ইয়র্কার কিংবা স্লোয়ারগুলো কার্যকর হচ্ছে। মিরপুরের মতো উইকেটের সুবিধা না পাওয়ায় লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনও ওভারপ্রতি দশের মতে রান দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে ক্যারিবীয়দের কাছে যেন খোলা বই হয়ে গেছে এই দলটি।

সেখানে গতকালও মাঠে এসে অনুশীলন করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কয়েকজন। সাগরিকার উইকেট আর আউটফিল্ড মনে ধরেছে তাদের। কিন্তু তানজিম সাকিবের ভাষায় মাঠটি যে ‘আমাদের’। এখানে অন্তত কাউকে সিরিজ জিতে ফিরতে দেবে না তারা।


Scroll to Top