গামিনি শেষ, কিন্তু মিরপুরের চরিত্র কেন অপরিবর্তিত?


মিরপুরের উইকেট যেন আবার ফিরে পেল পুরোনো রূপ। মন্থর, টার্নে ভরা, ব্যাটারদের জন্য দুঃস্বপ্ন। ব্যাটারদের মৃত্যুকূপ। শনিবার মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ব্যাটিংয়ে ধুঁকেছে স্বাগতিকরা। ৪৯.৪ ওভারে গুটিয়ে যায় ২০৭ রানে। এরপরও বাংলাদেশের স্পিনে ধরাশায়ী হয়ে ম্যাচ হেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

রঙিন গ্যালারি, সবুজ ঘাসের মাঝে কালো উইকেট। ধারণা ছিল, উইকেট হবে ধীরগতির ও স্পিন সহায়ক। বাস্তবে দেখা গেল তারচেয়েও কঠিন। যে পিচ তৈরির অভিযোগে প্রধান কিউরেটর গামিনী ডি সিলভাকে সরানো হয়েছিল, এই উইকেটে তার চেয়েও দ্বিগুণ টার্ন হয়েছে। প্রথম থেকেই বল নিচু হয়েছে, স্পিনারা পাচ্ছিলেন অস্বাভাবিক টার্ন। এমনকি পেসারদের গতিময় ডেলিভারিও আচমকা নিচু হয়ে ব্যাটারদের বিভ্রান্ত করেছে। ব্যাটিং হয়ে উঠেছে টিকে থাকার লড়াই।

হবেই বা না কেন? দল রীতিমতো ধুঁকছে ওয়ানডে ক্রিকেটে। ১৯ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বাজে অবস্থানে আছে দল। যার ফলে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলাটাও পড়ে গেছে শঙ্কায়। প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ চলতি বছর ওয়ানডেতে রান তুলেছে ওভারপ্রতি ৬ এরও বেশি করে। তাদের বিপক্ষে জিততে তাই এই উইকেটই ছিল ভরসা।

তবে তাতে বিপাকে পড়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। এমনিতেই শেষ কিছু দিনে দলের ব্যাটিং লাইন আপ ছিল বেশ বিপাকে। তার ওপরে এবার উইকেটও এমন। এখান থেকে রান তুলতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন দলের ব্যাটাররা। তার প্রমাণ ২১.৫ ওভার থেকে ৩৫.৩ ওভার পর্যন্ত ৮২ বলে কোনো বাউন্ডারি নেই। মাহিদুল ইসলাম নীরবতা ভাঙেন। বাঁ-হাতি স্পিনার গুদাকেশ মোতির বলে দারুণ এক সুইপে চার মেরে ৮২ বল পর আসে কাঙ্ক্ষিত বাউন্ডারি।

ইনিংসজুড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং ছিল ধীর ও সংগ্রামী। তাওহিদ হৃদয়ের ৯০ বলে ৫১, অভিষিক্ত মাহিদুল ইসলামের ৭৬ বলে ৪৬ ছাড়া আর কেউ ব্যাটে আলো ছড়াতে পারেননি। শেষদিকে দুই ছক্কায় রিশাদ হোসেনের ২৬ রানের ক্যামিও আর তানভির ইসলামের ছোট্ট ইনিংসে দল ২০০ পার করে। ততক্ষণে স্পিনে জর্জরিত স্বাগতিকরা। মিরপুরের ঘাসহীন উইকেট আবারও ব্যাটারদের বধ্যভূমিতে পরিণত হয়।

২০২৭ বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার লক্ষ্য নিয়ে ঘরের মাঠের সুবিধা অবশ্য ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে স্বাগতিকরা। ২০৭ রান করেও মিরাজরা ৭৪ রানের বড় জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।

Scroll to Top