গাজায় শান্ত মুহূর্ত: নেই ড্রোন, নেই বিস্ফোরণ, নেই হত্যাযজ্ঞ

ত্রাণের অপেক্ষায় স্বজনদের সঙ্গে এক শিশু। গত রোববার খান ইউনিসে। ছবি: এএফপি

গাজা উপত্যকার শহর দেইর আল-বালাহ’র বাসিন্দাদের জন্য এখন একটাই স্বস্তি। এখানে আর কোনো ড্রোন উড়তে দেখা যাচ্ছে না। বোমা বিস্ফোরণও হয়নি। পাওয়া যায়নি নতুন করে হত্যার খবর।

মঙ্গলবার শহরটি থেকে এমন তথ্য জানিয়েছেন আল জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খোদারি। তিনি লিখেছেন, এমন স্বস্তি থাকলেও বাসিন্দাদের ভাবনা এখন পরবর্তী করণীয় নিয়ে। বেশিরভাগ মানুষ বসতঘর হারিয়েছেন। বলতে গেলে তাদের নিজের বলতে যা ছিল সেগুলোর কিছুই আর নেই। অর্থ নেই, শিক্ষা ব্যবস্থাও ধ্বসে গেছে।

তাহলে যুদ্ধবিরতির পর কী হবে? এটাই এখন ফিলিস্তিনিদের মূল প্রশ্ন। যুদ্ধবিরতির পর বোমার শব্দ না শুনে তাদের ঘুম ভাঙলেও, দিনের শুরুতেই কঠিন বাস্তবতার মুখে পড়তে হচ্ছে। এখানে স্বাভাবিক জীবনযাপনের কোনো পরিবেশ অবশিষ্ট নেই। সবচেয়ে মৌলিক চাহিদাগুলো- পানি, বিদ্যুৎ, অবকাঠামো সবই ধ্বংস হয়ে গেছে।
ফিলিস্তিনিরা নিজ এলাকায় ফিরলেও নেই বসবাসের পরিবেশ। গত রোববার খান ইউনিসে। ছবি: এএফপি

দাইর আল-বালাহ থেকে হিন্দ খোদারি জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনিরা এখন আরও বেশি মানবিক সহায়তা পাওয়ার আশায় আছে। অনেকে চিকিৎসার জন্য অপেক্ষা করছেন। কেউ কেউ রাফাহ সীমান্তের দিকে তাকিয়ে আছেন। এই সীমান্ত পারাপার চালু হলে মানুষকে গাজা থেকে বেরিয়ে যেতে বা ফিরে আসার সুযোগ দেবে। ফিলিস্তিনিদের পুনরুদ্ধার ও স্বাভাবিক জীবনের আশা আদৌ বাস্তবায়িত হবে কি না- তা হয়তো সময়ই বলে দেবে।

গাজায় স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকেও ত্রাণ নিয়ে কোনও ট্রাক কিসুফিম সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করেনি। বেশ কয়েকটি ট্রাকের চালকদের ইসরায়েলি বাহিনীর সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। মঙ্গলবার প্রায় ৬০০ ট্রাকের মানবিক সহায়তা যেমন- খাদ্য, আশ্রয়সামগ্রী, ওষুধ ও জ্বালানি নিয়ে প্রবেশ করার কথা।

কয়েকজন চালক আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, তারা সোমবার সারাদিন অনুমতির অপেক্ষায় ছিলেন, কিন্তু পাননি।

হিন্দ খোদারি লিখেছেন, এটি দেখায় এখানে বিধিনিষেধ ও বিলম্ব কতটা ব্যাপক। পরিদর্শন প্রক্রিয়া অনেক সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চলে। কখনও কখনও পুরো দিনও লেগে যায়। ফলে প্রয়োজনীয় সহায়তা সীমান্তেই আটকে থাকে।

Scroll to Top